Home / মিডিয়া নিউজ / প্রবাসীরা রিয়াজ ভাইকে ‘জাতীয় বীর’ আখ্যায়িত করছে: সাজ্জাদ সুমন

প্রবাসীরা রিয়াজ ভাইকে ‘জাতীয় বীর’ আখ্যায়িত করছে: সাজ্জাদ সুমন

২০০৬ সালে ’আগুনের মেয়ে’ টেলিফিল্মের মাধ্যমে নির্মাতা হিসেবে অভিষিক্ত হন সাজ্জাদ সুমন।

এরপর বেশ কিছু দর্শকপ্রিয় খণ্ড নাটক ও টেলিফিল্ম নির্মাণ করেছেন। গেল ঈদে সাজ্জাদ সুমন

পরিচালিত ’দ্বৈরথ’, ’ক্লাসলেস মোখলেস’, ’কলুর বলদ’ এবং সাতপর্বের ’ফুটবল ফারুক’ নামের

একটি নাটক প্রচার হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে চ্যানেল আই তে প্রচার হওয়া

’কলুর বলদ’ নাটকটি। মেজবাহ উদ্দিন সুমন রচিত এই নাটকটি প্রচারের পর ইউটিউবসহ সোশাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচিত হয় কাজটি। নাটকটির সাফল্য ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে মুখোমুখি এই নির্মাতা:

সদ্য আলোচিত ’কলুর বলদ’ দিয়েই শুরু করা যাক। এই নাটকটি নির্মাণ করতে কোনো ঘটনা দ্বারা কি অনুপ্রাণিত হয়েছেন? প্রথমত ’কলুর বলদ’ গল্পটি আমার কাছে মনে হয়েছে একটি জীবনমুখি গল্প। এবং প্রবাসীদের নিয়ে আগে যে ধরনের কাজ হয়েছে, এটা তার থেকে ভিন্ন। অনেক প্রবাসী বলেছে যে, তারা এই ধরনের গল্প আর দেখেনি। একজন প্রবাসী দেশে ফেরার পর তার বুকের ভেতর চাপা যে একটা কষ্ট, সেটা কেউ জানে না। এই জায়গাটা নিয়েই আমরা কাজটি করেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে যে, এই গল্পটা নিয়ে কাজ করলে প্রবাসীদের পরিবারও তাদের কষ্টটা বুঝবে এবং সহানুভূতিশীল হবে। আমরা বাংলাদেশিরা সহানুভূতিশীল হবো। আমি এটা ভাবিনি যে, এই নাটক প্রবাসীরা দেখবে, দেখে কান্না করবে! আমি চেয়েছিলাম যে, প্রবাসীদের প্রতি অন্যান্যদের একটা অনুভূতির জায়গা তৈরি করতে, যাতে তাদের কাছে পরিবারের সদস্যরা অতিমাত্রায় প্রত্যাশার চাপ তৈরি না করে।

’কলুর বলদ’ নাটকের একটি দৃশ্যে রিয়াজ ও তানিয়া আহমেদ

নাটকটি সিক্যুয়েল আসছে?

হ্যাঁ, সিক্যুয়েল তৈরি করব। তবে এই গল্পের ধারাবাহিকতা না কিন্তু সেটা। প্রবাসীদের নিয়ে আমরা আরেকটা ভিন্ন ধরনের গল্প তুলে ধরবো সেখানে। প্রথমটা থেকে সিক্যুয়াল টপকানো নিয়ে বেশ চিন্তিত। তবে কনটেন্ট হবে অনেক শক্তিশালী। বাকিটা দর্শকদের উপর নির্ভর করছে। নাম থাকবে ’কলুর বলদ ২’। তবে তার সঙ্গে আরেকটা নাম থাকবে। সেটা হচ্ছে ’কলুর বলদ: অনিশ্চিত যাত্রা’। এটা কোরবানির ঈদের জন্য নির্মিত হবে। শিগগির শুটিং শুরু করবো।
’অনিশ্চিত যাত্রা’য় অভিনয় শিল্পী কারা থাকছেন?

এ ব্যাপারে আমরা এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেইনি। এমনও হতে পারে যে, আগের মতো রিয়াজ ভাই থাকতে পারেন। আবার আফরান নিশো আর মেহজাবিন থাকতে পারেন। তবে এখনই সেটা বলতে চাচ্ছি না।
’কলুর বলদ’ নাটকটার ক্ষেত্রে অনেকেই বলছে, যদি শহরের প্রেক্ষাপট না দেখিয়ে গ্রামের প্রেক্ষাপটে নির্মাণ করতেন?

আমরা আসলে একটা শহরতলীর গল্প বলেছি। তাই এখানে একটু শহরের আবহ ছিল। তবে আমরা দ্বিতীয় গল্পটা গ্রামে চিত্রায়ণ করব। কারণ সেটার প্রেক্ষাপট গ্রামীণ।
কলুর বলদ প্রচারের পর রিয়াজ কিছু বলেছেন?

আমাকে উনি জানিয়েছেন অনেক রেসপন্স পাচ্ছেন। রিয়াজ ভাইকে ’জাতীয় বীর’ হিসেবেও আখ্যায়িত করছে প্রবাসীরা। কেউ কিছু না বুঝে আবেগের বশে এমনও মন্তব্য করছেন যে, রিয়াজ ভাইকে জাতীয় পুরস্কার দেয়া হোক। এবং রিয়াজ ভাই নিজেও বলেছেন যে, তার কাছে অনেক ফোন আসছে। অনেকেই তাকে ফোন করে কান্নাকাটি করছে, নিজ নিজ অনুভূতি জানাচ্ছে। অর্থাৎ রিয়াজ ভাইকে প্রবাসীরা তাদের একজন মডেল হিসেবে দেখছে। আরেকটা কথা বলি চ্যানেল আইয়ের ইউটিউব থেকে নাটকটি ফেসবুকে পাইরেসি হয়েছে। বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে নাটকটি পোস্ট হয়েছে। সেখান থেকে ৪০ হাজারের বেশি শেয়ার এবং কয়েক লাখ ভিউ পড়েছে। একাধিক প্রমাণ রয়েছে আমার কাছে। ফেসবুকে যেয়ে ’কলুর বলদ’ সার্চ দিলে পুরো নাটকটির অসংখ্য লিঙ্ক দেখা যায়।

এমন বাস্তবধর্মী গল্প নিয়ে নাটক কম নির্মাণ হয় কেন?

আমিও ঠিক এই কথাটাই বলতে চাই। আমাদের বাংলা নাটকের যেই মূল কনটেন্ট, সেটা এখন কমে গেছে। দর্শক কিন্তু এই জীবন ঘনিষ্ঠ গল্পগুলো চায়। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেও এটাই বুঝতে পেরেছি যে, দর্শক আসলে ভালো গল্পের নাটক দেখে এবং ক্লাসিক নাটক দেখে। তবে এই ধরনের নাটক নির্মাণ করাটাও একটু কঠিন। ভালো নির্মাতা না হলে এই ধরনের কনটেন্ট নির্মাণ সম্ভব নয়।
বিশ্বকাপ নিয়ে এবার যে নাটকগুলো হয়েছে, সেগুলো কেমন আলোচনায় এসেছে?

ঈদের আগে বিভিন্ন চ্যানেল থেকেই এমনটা বলা হয়েছে যে, এবার মানুষ নাটক দেখবে না, ফুটবল খেলা নিয়েই থাকবে। তবে কথাটা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এবং আমি মনে করি না যে, ফুটবল কেন্দ্রিক গল্পগুলা খুব একটা ভালো হয়েছে বা দর্শক পছন্দ করেছে। কারণ ফুটবলের আসল গল্প হচ্ছে মাঠ, সেই মাঠের বাইরে অন্য কিছু মানুষ দেখবে না।

টেলিভিশন থেকে দর্শক কমে ইউটিউবের দিকে যাচ্ছে, একজন পরিচালক হিসেবে আপনি এটাকে কীভাবে দেখছেন?

এটা আসলে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল। যখন যেই প্রযুক্তি আসবে, মানুষ সেদিকেই ধাবিত হবে স্বাভাবিক। যারা বলে নাটকের ভবিষ্যৎ ইউটিউবেই, এটা ঠিক না। কারণ ভবিষ্যতে আসলে কী হয়, তা আমরা কেউই বলতে পারি না। যেমন পাঁচ-দশ বছর আগেও কি আমরা ভেবেছি যে, ইউটিউবে নাটকের এত চাহিদা তৈরি হবে? কিছু দিন পর দেখা যাবে যে, ফেসবুকেও নাটক প্রচার হচ্ছে। তো প্রযুক্তির এই উন্নয়নকে তো ঠেকানোর উপায় নেই, এটা হবেই। এখন আমাদের ভাবার বিষয় হচ্ছে, কনটেন্ট। কীভাবে কত ভালো কনটেন্ট আমরা উপস্থাপন করতে পারি, সেটাই খেয়াল করতে হবে।

প্রত্যেক নির্মাতারইতো একটা গোল থাকে, সেটা হচ্ছে সিনেমা। আপনি কী ভাবছেন?

সিনেমার জন্য অনেকটা এগিয়েছি, চিত্রনাট্য তৈরি করেছি, কিন্তু আবার পিছিয়ে গেছি। কারণ সিনেমার জন্য যেই পরিবেশটা দরকার, সেটা আমার মনে হচ্ছে নেই। প্রদর্শন নিয়ে যেমন সমস্যা আছে, আবার লগ্নি নিয়েও অনেক সমস্যা আছে। যেমন আমরা দেখি একটা সিনেমা অনেক ব্যবসা করছে। পরে আবার শুনি তার প্রযোজক লগ্নিও ফেরত পাননি। সেই জায়গা থেকে তারা সাহস পাচ্ছেন না। আর আমরাও পাচ্ছি না।
নতুন সিনেমা নির্মাণ নিয়ে যারা ভাবছেন, তারা আসলে কী ধরণের বাধার সম্মুখীন বলে আপনি মনে করেন?

আমি কখনই বলবো না যে, আমাদের কনটেন্টের অভাব আছে। বা প্রযোজকের অভাব আছে। প্রযোজক অনেক আছে, কিন্তু তারা লগ্নি ফেরতের গ্যারান্টি চায়। এখন এই গ্যারান্টি তো আসলে দেয়া সম্ভব না। আমার মনে হয়, দেশে যদি একশ’টা সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করা যায়, তাহলে এই সমস্যাটা দূর হয়ে যাবে।
ঈদে চ্যানেল আইয়ের পর্দায় প্রচার হয় ’কলুর বলদ’:

About Reporter Zara

Check Also

তাহসানকে নিয়ে গুঞ্জন, শাওনের দ্বিতীয় বিয়ে কবে?

প্রয়াত লেখক হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন। সম্প্রতি গুঞ্জন উঠেছিল তার বিয়ের। শোনা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Recent Comments

No comments to show.