ঈদুল আজহা ঘিরে পশু বহনের ট্রাকে কেউ চাঁদাবাজি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ যাতে এ ধরনের অপরাধে যুক্ত হতে না পারে সেজন্য পুলিশকে আগাম সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। মাঠপর্যায়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে রোববার এক ভিডিও কনফারেন্স পুলিশের আইজি ড. বেনজীর আহমেদ এ নির্দেশনা দেন। একইসঙ্গে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, পুলিশের কারও বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পেলে তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া বন্যাকবলিত এলাকাসহ দেশজুড়ে ঈদের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আগাম প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে বেশ কিছু নির্দেশনা দেন পুলিশের মহাপরিদর্শক।সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, বেলা ১১টার দিকে শুরু হওয়া ভিডিও কনফারেন্স চলে প্রায় ১ ঘণ্টা। সব রেঞ্জের ডিআইজি, মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার এবং পুলিশ সুপাররা কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে আইজিপির সঙ্গে একাধিক অতিরিক্ত আইজিপিসহ উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তারা যুক্ত হন ভার্চুয়াল এ কনফারেন্সে।
কনফারেন্সে উপস্থিত একজন ডিআইজিবলেন, ঈদে যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে সেজন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি। বাসাবাড়ি ও সড়ক-মহাসড়কে ডাকাতি, নৌ ডাকাতি এবং ছিনতাই-রাহাজানির বিষয়ে সুষ্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। গরুবাহী ট্রাকে যেন কেউ চাঁদাবাজি করার সাহস না পায় সেজন্য পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকতে বলেছেন। এমনকি পুলিশের কোনো সদস্য গরুবাহী ট্রাক থামিয়ে অযথা যেন যানজট সৃষ্টি না করে সে বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে। পাশপাশি পশুর হাটগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দেন আইজিপি।
আইজিপির বক্তব্যের বরাত দিয়ে একজন পুলিশ সুপার বলেন, ঈদে অনেকেই গ্রামের বাড়ি যাবেন। অনেক সময় তারা রাস্তায় ডাকাতদের কবলে পড়তে পারেন। এছাড়া অজ্ঞান ও মলম পার্টির খপ্পর থেকেও সুরক্ষা দিতে হবে। এজন্য সব বিষয়ে পুলিশি নজরদারি জোরদার করতে হবে। এছাড়া বন্যাকবলিত এলাকার নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। সেখানে নিয়মিত টহলের পাশাপাশি অতিরিক্ত চেকপোস্ট বসাতে হবে। পশুর হাটগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। আইজিপি বলেন, বন্যার পানিতে একদিকে বানভাসি মানুষের কষ্ট হয়, অন্যদিকে চুরি-ডাকাতি বেড়ে যায়। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই নিরাপত্তা ছক প্রণয়ন করতে হবে।
ভিডিও কনফারেন্সের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আইজিপি মহোদয় যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন সেগুলো ইতোমধ্যে ওয়্যারলেস বার্তার মাধ্যমে মাঠপর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জেলার এসপিরা সরাসরি নির্দেশনাগুলো শুনেছেন। তারাও সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছেন।’ তিনি বলেন, ‘কুরবানির পশুর হাটের নিরাপত্তা, রাস্তায় যেন গরু নিয়ে কেউ টানাটানি করতে না পারে, পাইকাররা যেন নিজ পছন্দের হাটে গরু নিয়ে যেতে পারেন-সে বিষয়েও আইজিপি পুলিশ সদস্যদের যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশ দিয়েছেন।’ আইজিপি বলেছেন, ফের যেহেতু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে তাই হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানতে পুলিশকে ভূমিকা রাখতে হবে।